জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এলজিইডি
সরকারের গৃহীত জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার আলোকে এলজিইডি কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যায় । গৃহীত জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে অন্যতম রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০। যুগপত্ভাবে,জাতিসংঘ প্রণীত সহস্রাব্দ উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নেও বাংলাদেশ প্রতিশ্রতিবদ্ধ ৷ এসব পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে- দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থসামাজিক সূচকে গতিশীলতা আনয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ |
দেশের অন্যতম প্রধান প্রকৌশল সংস্থা হিসেবে এলজিইডি দেশব্যাপী পল্লি, নগর ও পানি সম্পদ সেক্টরে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে । গৃহীত জাতীয় পরিকল্পনা ও জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি কার্যক্রমের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে এলজিইডির সম্পৃক্ততা নিচে তুলে ধরা হলো-
রূপকল্প ২০২১
রূপকল্প ২০২১ এর মূল লক্ষ্য দারিদ্র্য দূর করে মধ্যম আয়ের বাংলদেশ প্রতিষ্ঠা করা । রূপকল্প ২০২১-এ নির্ধারিত লক্ষ্যসমূহ অর্জন প্রণীত হয়েছে অনুষঙ্গী দীর্ঘমেয়াদী প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২০২১)। প্রেক্ষিত পরিকল্পনার আলোকে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১১-২০১৫) বাস্তবায়িত হযেছে এবং পরবর্তীতে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অন্তর্ভুক্ত করে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০২০) প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার নীতির ধারাবহিকতায় সপ্তম রিকল্পনার নীতি ও কৌশল এমনভাবে সমন্বয় করা হযেছে, যাতে বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনার সামাজিক ও অর্থনৈতিক ফলাফল সহজেই অর্জন বরা যায় ।
২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি প্রবৃদ্ধি) ১০ শতাংশ এবং মাথাপিছু জাতীয় আয় দুই হাজার ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০২০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ১৮.৬০ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৮.৯০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০২০)
সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মর্মার্থ হলো প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা এবং নাগরিক ক্ষমতায়ন। এই পরিকল্পনায় সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে বেশি কর্মসৃজনে, জিডিপি প্রবৃদ্ধি উন্নীতকরণে এবং সুষম আয় বণ্টন নিশ্চিতকরণে, যাতে দারিদ্র্য নিরসন ও জনগণের ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়াকে আরও বেগবান করা যায়। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ গ্রহণে জেন্ডার সমতা, সামাজিক সুরক্ষার বিস্তৃতি নিশ্চিত করা এবং শ্রমের অধিকার সুরক্ষা ও জনগণের ক্ষমতায়ন সুগম করার বিষয়ে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সমৃদ্ধশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু অভিঘাত সহনশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে একটি পথচিত্র মেলে ধরতে পরিকল্পনায় একটি সবুজ ও টেকসই প্রবৃদ্ধি কৌশলের ওপর সমধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)
২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ অংগীকারব্ধ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সকল সংস্থা ২০১৫-২০৩০ মেয়াদে এসডিজি বাস্তবায়নে কাজ করছে। দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রকৌশল সংস্থা হিসেবে এসডিজির লক্ষ্য অর্জুনে এলজিইডি রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এলজিইডির কার্যক্রম এসডিজির মোট ১৭টি অভীষ্টের মধ্যে ১০টি অভীষ্টের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত।
এলজিইডির কার্যক্রমে এসডিজির অভীষ্টসমূহঃ
অভীষ্ট-১ দারিদ্র্যবিলোপ
অভীষ্ট-২ ক্ষুধামুক্তি
অভীষ্ট-৩ সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ
অভীষ্ট-৪ গুণগত শিক্ষা
অভীষ্ট-৫ জেন্ডার সমতা
অভীষ্ট-৬ নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন
অভীষ্ট-৯ শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো
অভীষ্ট-১১ টেকসই নগর ও জনপদ
অভীষ্ট-১২ পরিমিত ভোগ ও টেকসই উৎপাদন
অভীষ্ট-১৩ জলবায়ু কার্যক্রম এর সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্তি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-র মোট ১৭টি অভীষ্টের মধ্যে ১০টি অভীষ্ট এবং ১৬৯টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস